গবেষণার উপাদান এবং ধাপ

বিজ্ঞানে গবেষণা এবং গবেষণার ফলাফল প্রণয়ন কতগুলো সুনির্দিষ্ট ধাপে সংগঠিত হয় । এক্ষেত্রে বেশকিছু উপাদানও রয়েছে। সেগুলো এখানে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হল-

গবেষণার ধাপ এবং উপাদানগুলো হল-

  • ধারণা বা প্রত্যয়
  • অনুকল্প
  • তত্ত্ব সূত্র
  • নীতি
  • স্বীকার্য

ধারনা/প্রতয়

কোন বিষয় সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত চিন্তা, উপলগ্ধি বা বোধগম্যতাই হল ঐ বিষয় সম্পর্কে ধারণা বা প্রত্যয় (Concept) 

অনুকল্প

যখন কোন ধারণা বা প্রত্যয় চারপাশের বস্তুজগৎ ও তার আচরণের সাথে মিলে যায় কিন্তু তার কোন তাত্ত্বিক প্রমাণ থাকে না তখন সেই ধারণা বা প্রত্যয়কে তাকে বলা হয় অনুকল্প (Hypothesis) 

তত্ত্ব

অনুকল্প আগে থেকেই বস্তুজগতের সাথে মিলে যায় কিন্তু কোন তাত্ত্বিক প্রমাণ থাকেনা । কিন্তু যখন কোন অনুকল্প তাত্ত্বিকভাবেও প্রমাণিত হয় তখন তাকে তখন তত্ত্ব (Theory) বলে 

সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, সকল তত্ত্বই অনুকল্প, কিন্তু সকল অনুকল্পই তত্ত্ব নয় 

সূত্র

কোন তত্ত্বের মূল কথাগুলো একটি উক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হলে তাকে সূত্র (Law) বলে  এটি মুলত তত্ত্বেরই শুধু সংক্ষিপ্ত রুপ ।

সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, সকল সূত্রই তত্ত্ব, কিন্তু সকল তত্ত্বই সূত্র নয় 

স্বীকার্য

কোন তত্ত্ব বা সূত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কখনও যদি এমন কোন তত্ত্ব বা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় যার সম্পর্কে পূর্ব থেকে কোন স্পষ্ট ধারণা বা ব্যাখ্যা দেয়া নেই তখন তা ভৌতজগতের আচরণের সাথে সামজ্জস্য রেখে পূর্বশর্ত আকারে স্বীকার করে নেয়া হয় যাকে স্বীকার্য (Postulates) বলে 

নীতি

যে সকল প্রাকৃতিক সত্য সরাসরি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করা যায় বা প্রকৃতিতে প্রতিনিয়ত ঘটে এবং ঐ সত্যের সাহায্যে অনেক প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা যায় তাকে নীতি (Principle) বলে  

 

প্রমানিত হলেও অ্যাভোগ্যাড্রোর তত্ত্বকে অনুকল্প বলা হয় কেন ?

আমেদিও অ্যাভোগাড্রোর অনুকল্প প্রমাণিত হয়ে তত্ত্ব হওয়া স্বত্বেও এটিকে অ্যাভোগাড্রোর অনুকল্প বলা হয় । এর পিছনে যৌক্তিক কোন কারণ নেই । অ্যাভোগাড্রো তার দেয়া অনুকল্পটি যখন তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণ করতে পারছিলেন না, তখন এটি পুরোপুরি গ্রহণযোগ্যতা না পেলেও এটি ব্যবহার করে সঠিক সমাধানে পৌঁছানো যেত । সে সময় এই অপ্রমাণিত এই অনুকল্পটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় অ্যাভোগাড্রোর অনুকল্প নামে । পরে মিলিক্যানের হাত ধরে এটি প্রমাণিত হলেও এর অনুকল্প পরিচিতি টি রয়েই যায় । তবে আপনি চাইলে একে তত্ত্ব বা সূত্র বলতে পারেন । বরং সেটিই অধিক গ্রহণযোগ্য ।  

এভাবে ধাপে ধাপে একটি বিজ্ঞানসম্মত ধারণা তত্ত্ব পর্যন্ত আসলেই একটি গবেষণা পরিপূর্ণতা পায় । 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ