পার্থ আর হাফিজুর রহমান আলভি নিউ মার্কেটে গেল ঘড়ি কিনতে ৷ ৩০০ টাকা
করে তারা দুজনে দুইটা সুন্দর ঘড়ি কিনল ৷ এই নিয়ে দুজনে ভিশন খুশি ৷ আনন্দটাকে আরও বড়
করতে আলভি তার ঘড়িটা নিজে না পরে গার্লফ্রেন্ডকে দিল ৷ এইদিকে ৩০০টাকার ঘড়ি দেওয়ায়
আলভির গার্লফ্রেন্ড ভিশন রেগে (কম দামি) ৷ এতটা রেগে সে সিদ্ধান্ত নিল, সে আর এই পৃথিবীতেই থাকবেনা ৷ আলভিকে শেষ ম্যাসেজ এ ইচ্ছা মত গালি দিয়ে ঘড়িটা
ফেরত দিয়ে বৃহস্পতি গ্রহে চলে গেল ৷ অনেক ভালবাসত আলভি মেয়েটাকে ৷ কিন্তু সেতো শেষ
কথাটা না শুনেই চলে গেল বৃহস্পতি গ্রহে ৷ এই কষ্ট বুকে নিয়ে বেচারা আলভি হতাশা চত্তরে
বসে এক টান দু টান করছিল ৷
এদিকে এ ঘটনা শুনে পার্থ ছুটে গেল আলভির কাছে এবং সব ঘটনা
শুনে সিদ্ধান্ত নিল, যেমন করেই হোক সে মেয়েটাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে
৷ একবার সে বন্ধুর জন্য, এই মেয়েটির প্রতি তার ভালবাসাকে সে বিসর্জন
দিয়েছে ৷ আজ আরও একবার বন্ধুর পাশে সে থাকবে ৷ তাই পার্থ অতীব কম ভরের এক মহাকাশ জানে
করে প্রায় আলোর বেগে কাছাকাছি বেগে বৃহস্পতি গ্রহে যাত্রা শুরু করল এবং যাবার সময় আলভিকে
বলে গেল, সে যেন এই জায়গাতেই তার ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকে ৷ সেই
থেকে শুরু হল আলভির অপেক্ষা ৷
দেখতে দেখতে অনেক বছর কেটে গেল ৷ কিন্তু পার্থ এলো না ৷ সে এতদিনে
ধরেই নিয়েছে, আলভিও
আর ফিরে আসবেনা ৷ এতদিনে আলভিরও অনেক বয়স হয়েছে ৷ এখন আলভি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে
চাকুরি করে ৷ তবে মাঝে মাঝে নিজের ভার্সিটিতে এসে ঘুরে যায় ৷ হতাশা চত্তরেও বসে,
যেখান থেকে সে তার বন্ধু এবং প্রিয়তমাকে হারিয়েছিল ৷ হঠাত একদিন হতাশা
চত্তরে আলভি ভিড় দেখতে পেল ৷ কাছে গিয়ে যা দেখল, তার জন্য সে
মোটেও প্রস্তুত ছিলনা ৷ দেখল, পার্থ তার প্রিয়তমাকে নিয়ে ফিরে
এসেছে ৷ কিন্তু অবাক করার ব্যাপার ছিল, তারা দুজনই ঠিক আগের মতই
দেখতে আছে ৷ তাই সে কাছে যেতেও থেমে গেল ৷
আর পার্থের জন্য ব্যাপারটা ছিল আর অদ্ভুত ৷ সেতো মাত্র কয়েক দিন মহাকাশে
থেকে এসেছে তাতেই আশেপাশের মানুষগুলো এত পাল্টে গেল কি করে ? নাকি সে ভুল জায়গায় এসে পরেছে৷
হঠাত পার্থ লক্ষ করল, আলভির হাতে সেই ঘড়িটি এখনও আছে ৷ যেটা সে
তার গার্লফ্রেন্ডকে দিয়েছিল ৷ আর অবাক করার বিষয় ছিল, আলভির হাতের
ঘড়িটি তার হাতের ঘড়ির তুলনায় অনেক বেশি(প্রায় ৭০%) দ্রুত চলছিল ৷ পার্থ বুঝতে পারল, তার বেগ অনেক বেশি থাকায়
কাল দীর্ঘায়নের ফলেই এমনটি হয়েছে ৷ আর তারা সময় নিয়ে একটা সমাধানে পৌঁছাল ৷
সব কিছু সমাধান হলেও গার্লফ্রেন্ডকে আলভি ফিরে পেল না ৷ মেয়েটা বৃদ্ধ
আলভির সাথে যেতে রাজি হলনা ৷ সে পার্থর পূর্বের প্রপোজালে সারা দিয়ে পার্থর সাথেই রয়ে
গেল ৷ যার জন্য এত অপেক্ষা তার বিশ্বাস ঘাতকতা আর বন্ধুর এমন আচরনে আলভির নিজের উপর
অনেক রাগ হল ৷ সে সিদ্ধান্ত নিল আর এই বিশ্বাস ঘাতকদের সাথে সে থাকবেনা ৷ মুহুর্তের
মধ্যে সে তার সবটুকু রাগকে বেগে রুপ দিয়ে,
আলোর বেগকে হার মানিয়ে এর থেকেও বেশি বেগে ছুটতে লাগল ৷ সে লক্ষ করল,
তার ঘড়িটি উল্টা ঘুড়ছে ৷ সাথে সাথে তার বয়সও পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে
। সে আরও ছুটতে লাগল ফলে তার বয়স আরও পিছন দিকে এগোতে থাকল । এক সময় সে পুর্বের
অবস্থার থেকেও অনেক ছোট হয়ে আসল ।
নিজের এই অবস্থা অবলোকন করে সে পৃথিবীতে ফিরে এলো এবং শোভরাত
হাসান আলভী পরিচয়ে পরিচিত করল । কারণ সে সময়কে নিয়ন্ত্রণে এনে একে পিছন দিকে চালনা
করেছে । তাই তার নামটি যাতে সময় সম্রাটের ইতিহাস বহন করে তাই সে এমন নাম বেছে নিল
।
জিওন আহমেদ
0 মন্তব্যসমূহ