ঘটনা
দিগন্ত শব্দটা আমাদের সবার কাছেই কমবেশি পরিচিত ৷ সহজ
ভাষায় ঘটনা দিগন্ত হল- একটি সীমারেখা ৷ এই সীমারেখা হল স্থান
এবং কালের ৷ স্থান এবং কালকে আমরা একটা সীমার মধ্যে বেধে দিতে
পারি ৷ যার বাইরে এসব স্থান এবং কাল বেড়িয়ে আসতে পারবেনা ৷ অর্থাৎ আপনি যদি এই সীমার মধ্যে অবস্থান করেন, তবে আপনি সেই স্থান
এবং কালকে উপলব্ধি করতে পারবেন ৷ কিন্তু এর বাইরে অবস্থান
করলে আপনার উপর এগুলোর কোন প্রভাব পড়বেনা ৷
সীমারেখা
বুঝালেও সাধারণ কোন সীমারেখা বুঝানোর জন্য ঘটনা দিগন্ত শব্দটা ব্যবহার করা হয়না ৷ ঘটনা দিগন্ত বলতে ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহব্বরের প্রভাবের সীমাকে
বুঝানো হয় ৷ আমরা জানি, কৃষ্ণ গহব্বর হল- মহাবিশ্বে কিছু অদৃশ্য
এবং সংকুচিত বস্তু ৷ একইসাথে ক্ষুদ্র আকার এবং অনেক বেশি ভরের কারনে
এদের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল অনেক বেশি হয় ৷ আর এই তীব্র মহাকর্ষীয়
টানের কারনে এদের মধ্য থেকে আলো পর্যন্ত বেড়িয়ে আসতে পারেনা ৷ যা
আমাদের দৃষ্টি থেকে
এদের অদৃশ্য থাকার মূল কারন ৷
মহাকর্ষ
বল তীব্র হওয়ার কারনে এদের মহাকর্ষীয় সীমার মধ্যে অন্য কোন বস্তু চলে আসলে তাকের মূহুর্তের
মধ্যে এরা নিজেদের মধ্যে টেনে নিতে সক্ষম হয় ৷ কিন্তু এই আকর্ষনের সীমা কিন্তু
অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত নয় ৷ এদের এই সীমার, সর্বশেষ
সীমাকে আমরা বলে থাকি ঘটনা দিগন্ত ৷ কৃষ্ণ গহব্বরের এই ঘটনা
দিগন্ত আলোকরশ্মির মাধ্যমে গঠিত হয় ৷ যা একটি একটি কৃষ্ণ
গহব্বরের চারদিকে পরিধি রেখা হিসেবে ধরা যায় ৷ কৃষ্ণ গহ্বরের কেন্দ্র
থেকে এদের দূরত্বকে আমরা কৃষ্ণ গহ্বরের ব্যাসার্ধ্য ধরে নিতে পারি । কৃষ্ণ গহ্বরের
এই ব্যাসার্ধকে আমরা শোয়ার্জশিল্ড ব্যাসার্ধ বলে থাকি । আর এসব আলো ঘটনার দিগন্তের
শেষ সীমায় থাকলেও, এরা কৃষ্ণ গহব্বরের সীমা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনা ৷ তাই এসব আলো কৃষ্ণ গহব্বরের মধ্যে চিরকাল রয়ে যায় এবং কৃষ্ণ গহব্বরের
কিনারা বরাবর ঘুরপাক খায় ৷ অনেকটা পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ানোর মত ৷ যারা পুলিশের কাছ থেকে এক ধাপ সামনে এগিয়ে থাকবে, কিন্তু কখনও
পুলিশের কাছ থেকে পুরোপুরি পালিয়ে যেতে পারবেনা ৷
1 মন্তব্যসমূহ
খুব সুন্দর উপস্থাপন।
উত্তরমুছুন