প্রকৃতিকে
ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে একে জানা এবং প্রয়োগের মাধ্যমে মানব সভ্যতার সমস্যা সমাধানই
পদার্থবিজ্ঞানের প্রাথমিক লক্ষ এবং উদ্দেশ্য । আরও স্পষ্ট ভাষায় বলতে গেলে, পর্যবেক্ষণ,
পরীক্ষণ ও বিশ্লেষণের আলোকে বস্তুর ভর ও শক্তির রুপান্তর, তাদের মধ্যকার সম্পর্ক
উদঘাটন এবং পরিমাণগতভাবে তা প্রকাশ করাই পদার্থবিজ্ঞানের মূল লক্ষ্য ।
বাস্তব
জীবনের প্রতিটি ঘটনাকে যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু ব্যাখ্যা এবং সমস্যার
সমাধান সহ নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে বিশ্বগ্রাম রচনা করেছে পদার্থবিজ্ঞান । পঠন
পাঠনের সুবিধার জন্য এই সুবিশাল পদার্থবিজ্ঞানকে অনেকগুলো শাখায় বিভক্ত করা হয়েছে । এগুলোঃ
- সাধারণ পদার্থবিজ্ঞান ।
পরিমাপ, সাধারণ গতিবিদ্যা, বল এবং নিউটনের বলের সূত্র সমূহ নিয়ে আলোচনা করা
হয়ে থাকে এই শাখায় ।
- তাপ বা তাপগতিবিজ্ঞান ।
বস্তুর উপর তাপের প্রভাব, তাপীয় ইঞ্জিন এবং তাপগতিবিদ্যার সূত্র সমূহ নিয়ে
আলোচনা করা হয় ।
- শব্দবিজ্ঞান ।
শব্দ, শব্দের উৎপত্তি এবং শব্দের প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করা হয় । এছাড়া শব্দ তরঙ্গের
বিশ্লেষণ পদার্থবিজ্ঞানের এই শাখায় করা হয় ।
- আলোকবিজ্ঞান ।
আলো, আলোর প্রকৃতি, আলোর ধর্ম এবং আলোর আচরণ সমূহ নিয়ে এই শাখায় আলোচনা করা হয়
। পাশাপাশি জ্যামিতিক এবং ভৌত ধর্মের ব্যাখ্যাও এই শাখায় করা হয় ।
- তড়িৎচুম্বক বা চুম্বকবিজ্ঞান ।
চুম্বক, চুম্বকের ধর্ম সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয় । পারমানেন্ট এবং
ইলেক্ট্রম্যাগনেট নিয়েও আলোচনা করা হয় এই শাখায় ।
- তড়িৎ বিজ্ঞান ।
তড়িৎ, তড়িতের উৎপত্তি, তড়িতের ব্যবহার এবং আচরণ নিয়ে আলোচনা করা হয় ।
- ইলেকট্রনিক্স ।
ইলেকট্রনিক্স বর্তনী, কাঁচামাল এবং প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয় । ইন্টিগ্রেটেড
সার্কিট এই অংশেরই আলোচ্য বিষয় ।
- পারমানবিক বিজ্ঞান ।
পরমাণু, পরমাণুর আচরণ, সাধারণ এবং বিশেষ ধর্ম
নিয়ে আলোচনা করা হয় ।
- বল বিজ্ঞান ।
- কঠিন অবস্থার পদার্থবিজ্ঞান ।
কঠিন পদার্থ সমূহের ধর্ম এবং উৎপত্তি নিয়ে আলোচনা করা হয় ।
সর্বশেষ এবং আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান মূলত এই শাখাটি । প্রকৃতির আচরণগুলোকে
সূত্রবদ্ধ করতে চেষ্টা করে । সেগুলোকে গানিতিকভাবে ব্যাখ্যা করে । এছাড়া ক্ষুদ্রাতি
ক্ষুদ্র কণা সমূহের আচরণ নিয়ে আলোচনা করে এই শাখা ।
- নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞান ।
পরমাণুর নিউক্লিয়াস, নিউক্লিয়াসের ধর্ম এবং ইউক্লিয়ার বন্ধন ও ভাঙ্গন নিয়ে
আলোচনা করা হয় ।
- জ্যোতির্বিজ্ঞান ।
দূরের এবং অদৃশ্য বস্তু সমূহকে নিয়ে আলোচনা করা হয় । মহাকর্ষ এবং মহাবিশ্বের উৎপত্তি
এই শাখার অংশ ।
- ক্রায়োজেনিক্স ।
ক্ষুদ্র এবং ঠান্ডা বস্তুর মাধ্যমে সার্জারি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা
হয় ।
পদার্থবিজ্ঞান অবশ্যই একটি বিস্তর শাখা । এটিকে শুধুমাত্র কয়েকটি শাখায় আবদ্ধ
করা সম্ভব নয় । প্রকৃতির সকল বিষয় এবং আচরণ নিয়েই কাজ করে এই পদার্থবিজ্ঞান ।
0 মন্তব্যসমূহ