পরমাণুর যোজ্যতা কাকে বলে ?
কোন একটি মৌলের সর্বশেষ শক্তিস্তরে যত সংখ্যক বিজোড় ইলেকট্রন থাকে তাই তার যোজ্যতা । পরমাণু তার সর্বশেষ শক্তিস্তরের বিজোড় ইলেকট্রন ত্যাগে আগ্রহ প্রকাশ করে অথবা বিজোড় অবস্থা পূর্ণ বা জোড় করার জন্য সেই সেখানে আর একটি ইলেকট্রন গ্রহনে আগ্রহ প্রকাশ করে । আবার কখনও কখনও অতিরিক্ত ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন সম্ভব না হওয়া কিংবা দুইটি মৌলেরই তড়িৎ ঋণাত্মকতা সমান বা কাছাকাছি হওয়ায় তারা ইলেকট্রন আদান প্রদান না করে নিজেদের মধ্যে শেয়ার করে । এসব ক্ষেত্রে যত সংখ্যক ইলেকট্রন আদান, প্রদান বা শেয়ার হয়ে থাকে তাই সেই মৌলের যোজনী বা যোজ্যতা ।
পরমাণুর যোজ্যতার পর্যায়বৃত্ততা
পর্যায়
সারণীতে একই গ্রুপের উপর থেকে নিচের দিকে গেলে সর্বশেষ শক্তিস্তরে বিজোড় ইলেকট্রন
সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয়না । তাই একই পর্যায়ের উপর থেকে নিচের দিকে গেলে পরমাণুর
যোজ্যতার কোন পরিবর্তন হয় না । অর্থাৎ পর্যায় সারণির একই গ্রুপের মৌলগুলোর যোজ্যতা একই ।
কিন্তু একই
পর্যায়ের বাম থেকে ডান দিকে গেলে সর্বশেষ শক্তি বিজোড় ইলেকট্রন সংখ্যা বাড়তে থাকে,
তাই যোজ্যতাও বাড়তে থাকে । কিন্তু এত অধিক সংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহণ কিংবা ত্যাগের
সীমাবদ্ধতা আছে । আবার বিজোড় ইলেকট্রনের সাথে নতুন একটি ইলেকট্রন যুক্ত হলে
ইলেকট্রন সংখ্যা জোড়ও হয়ে যেতে পারে, তাই যোজনী নাও বাড়তে পারে । বাড়তে থাকলেও কিছু
ব্যাতিক্রম ছাড়া ৪টির বেশি ইলেকট্রন গ্রহণ কিংবা ত্যাগ করা সম্ভব নয় । এত বেশি
সংখ্যক ইলেকট্রন মুক্ত করতে করতে পরমাণুকে অনেক বেশি শক্তি দিতে হবে, যাতে পরমাণু
ভেঙ্গেও যেতে পারে । কাজেই আপাততভাবে পর্যায় সারণির একই পর্যায়ের বাম থেকে ডান
দিকে গেলে ইলেকট্রন ত্যাগের যোজ্যতা বাড়তে থাকে । একটি পর্যায় গিয়ে সর্বোচ্চ হয়
এবং তারপর ইলেকট্রন গ্রহনের যোজ্যতা কমতে থাকে ।
0 মন্তব্যসমূহ