ম্যানহাটন
প্রকল্প পারমাণবিক
বোমা তৈরির
জন্য প্রতিষ্ঠিত মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রকল্পের নাম যাতে যুক্তরাজ্যের সক্রিয়
সহযোগিতা ছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত পারমাণবিক বোমা সফলভাবে বিস্ফোরণের
ফলেই দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল। একে পৃথিবীর
ইতিহাসে সর্ববৃহৎ পদ্ধতিগত, শৈল্পিক ও বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা
হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
১৯৪৫
সালের মূল্য অনুযায়ী এই প্রকল্পের জন্য খরচ হয়েছিল প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
এবং এতে মোট ১৭৫,০০০ লোক কাজ করেছিল। প্রকল্পের কাজ
সম্পূর্ণ গোপনে সম্পাদিত হয় এবং সেখানকার খুব কম লোকই তার প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতো
। প্রকল্পের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় কিছু লোকই পারমাণবিক বোমা তথা তৎকালীন পৃথিবীর সবচেয়ে
শক্তিশালী অস্ত্র নির্মাণের বিষয়টি অবগত ছিল। ম্যানহাটন
প্রকল্প পৃথিবীর
ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা ঘটায় যাকে বলা হয় "পারমাণবিক যুগ"। পারমাণবিক
বোমা কতটা
ভয়ানক এবং বিধ্বংসী হতে পারে, আর এর প্রতিক্রিয়াই বা কি
হতে পারে, প্রকল্পের মাধ্যমে তা পরিষ্কার হয়েছে।
পারমাণবিক বোমা তৈরির পর একটি নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার উদ্ভব ঘটেছে। এর ফলে
বর্তমানে এতো পরিমাণ পারমাণবিক বোমা উৎপাদিত হয়েছে যার মাধ্যমে মানব সভ্যতা এবং পৃথিবীর
অধিকাংশ জীবকূল মুহুর্তেই ধ্বংস করে দেয়া সম্ভব।
ম্যানহাটন
প্রকল্প ৪টি
পারমাণবিক বোমা বানিয়েছিল। এর মধ্যে ট্রিনিটি নামক
প্রথম বোমাটি নিউ মেক্সিকোর আলামোগোর্ডোর নিকটে পরীক্ষামূলকভাবে বিস্ফোরিত করা
হয়। অন্য দুটি বোমা ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট এবং ৯ আগস্ট তারিখে যথাক্রমে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বিস্ফোরিত
হয়। শেষ বোমাটি আগস্টের শেষ দিকে জাপানের উপর
নিক্ষেপ করার জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই জাপান আত্মসমর্পণ
করে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
0 মন্তব্যসমূহ